মোঃ জসিম উদ্দিন; খানসামা (দিনাজপুর)প্রতিনিধিঃ-

শস্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত উত্তরের জেলা দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার চারদিকে এখন ঘন সবুজের সমারোহ। ঢেউয়ের মতো খেলে যাচ্ছে ধান গাছের সবুজ পাতা ও শীষ। আর এই সবুজের ঢেউয়ে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। দিগন্ত জোড়া সবুজ ফসলের মাঠ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও বিকশিত করে তুলেছে।

 

কিছুদিন পরেই সবুজ ধানগাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করবে। এরপর সোনালী ধানের শীষে ঝলমল করবে ফসলের মাঠ। মাঠ ভরা ফসল দেখে কৃষকদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের ছোঁয়া। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটে তাহলে এবার আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে ১৩ হাজার ৭৫৬ হেক্টর জমিতে আমন-হেউত ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তার চেয়ে বেশি জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে।

উপজেলায় এবার উফশী জাতের ধান প্রায় ৯৫% কৃষকরাই রোপণ করেছে।

 

ইতোমধ্যেই আমন ধানের শীষ বের হয়েছে। তবে কিছু কিছু জমিতে ধানে রোগ দেখা দিলেও সেটি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। তারপরও সতর্কতার সাথে জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করছে কৃষকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে মাঠ আমন- হেউত ধানের চাষাবাদে ভরে গেছে। ধানক্ষেতে ওষুধ প্রয়োগে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা। স্থানীয় কৃষকরা জানান, কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে চাষাবাদকৃত আমন ধান গতবারের চেয়ে এবার ভালো হয়েছে। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে তবে এবার ধানের বাম্পার ফলন হবে ইনশাল্লাহ।

 

উপজেলার ছাতিয়ান গড় গ্রামের কৃষক মমিনুল ইসলামসহ কয়েকজন কৃষক জানান, এবার প্রতিটি গ্রামে প্রায় জমিতে আমন ধান আবাদ করা হয়েছে। এখন সবুজ থেকে সোনালী রং ধারণ করছে ফসলের মাঠ। ভালো ফলন হবে বলে আমরা আশা করছি।

উপজেলার সূবর্নখুলি গ্রামের কৃষক সেফাউল ইসলাম বলেন,আমি চলতি মৌসুমে ৬ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছি, আশা করছি ভালো ফলন হবে।

খানসামা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার হাবিবা আক্তার জানান, আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে আসছি এবং কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অধিক ফলনের জন্য পরিমিত সার ব্যবহার, কীটনাশক, পানি সাশ্রয়, পোকামাকড় দমন এবং সার্বিক পরিচর্যায় কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করছি। এর ফলে কৃষকরা সঠিক সময়ে সার ও কীটনাশক তাদের ফসলি জমিতে প্রয়োগ করতে পেরেছে। আশা করা যাচ্ছে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে অন্য বছরের চেয়ে এ বছর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।